Header Ads

আইএস যোদ্ধা নববধূ কিশোরী

আইএস যোদ্ধা নববধূ কিশোরী


Linda wendjel 
ইরাকের মসুল শহর থেকে ১৬ বছর বয়সী এক জার্মান কিশোরী যোদ্ধাকে আটক করেছে ইরাকি বাহিনী। লিন্ডা ওয়েনজেল নামের নববধূ ওই কিশোরী জার্মানির ড্রেসডেনের কাছের শহর পুলসনিৎজের অধিবাসী। গত বৃহস্পতিবার মসুলের একটি সুড়ঙ্গ থেকে ২০ নারী যোদ্ধাকে আটক করা হয়। এদের মধ্য লিন্ডাও ছিল। সে আইএসের স্নাইপার ছিল বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে।
উদ্ধারের পরে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছিল, লিন্ডা ওয়েনজেল ইয়াজিদি কিশোরী। উদ্ধার হওয়ার পরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, লিন্ডাকে ঘিরে আছেন ইরাকি বাহিনীর সদস্যরা। সে ফ্যাকাশে ও ভীত চোখে তাকিয়ে আছে। ধুলো মাখা শরীরে গলায় একটি রঙিন স্কার্ফ জড়িয়ে রেখেছে লিন্ডা।
এক বছর আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় লিন্ডা। সে তার মা ক্যাথরিন ওয়েনজেল ও সৎবাবা থমাসের সঙ্গে থাকত। প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টান পরিবারে বড় হওয়া এই কিশোরী নিখোঁজ হওয়ার কয়েক মাস আগ পর্যন্ত ধর্মের ব্যাপারে কোনো আগ্রহ দেখায়নি। ২০১৬ সালে বসন্তে মা-বাবাকে জানায়, সে ইসলাম ধর্মের ব্যাপারে আগ্রহী।

তুরস্কের ইস্তাম্বুল হয়ে সিরিয়া-তুর্কি সীমান্ত দিয়ে আইএস-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ঢোকে লিন্ডা। সেখানে গিয়ে ইন্টারনেটে পরিচয় হওয়া জঙ্গির সঙ্গে দেখা করে এবং তাকে বিয়ে করে। ওই জঙ্গিই লিন্ডাকে বাড়ি ছেড়ে আইএসে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করে। গত অক্টোবরে মসুলে ইরাকি বাহিনীর আক্রমণ শুরুর আগেই মসুলে ঢোকে লিন্ডা।
লিন্ডার কয়েকজন বন্ধু জানিয়েছে, ২০১৬ সালের শেষের দিকে অনলাইনেই জঙ্গি আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয় লিন্ডা। ইসলাম গ্রহণ করে। এরপর সে আরবি শেখা শুরু করে। ইসলাম সম্পর্কে নিজের মুগ্ধতার কথা সে সবাইকে বলত।
পুলিশের ধারণা, অনলাইনে পরিচয়ের পর লিন্ডা একজন জঙ্গির প্রেমে পড়ে যায়। ওই জঙ্গিই লিন্ডাকে সিরিয়ায় নিয়ে যায়। পরে তাকে মসুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
গত বছরের জুলাইয়ে নিখোঁজের আগে লিন্ডা মাকে বলে, সে বন্ধুর বাসায় এক সপ্তাহ থাকবে।
লিন্ডা মায়ের পরিচয় ব্যবহার করে তুরস্ক যায়। সেখান থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে সিরিয়ায়। সেখানে তাকে সহযোগিতা করে আইএস যোদ্ধাদের কাছে পৌঁছে দেয় এক ব্যক্তি।

গত বছরের জুলাইয়ে লিন্ডার মা ক্যাথরিন ওয়েনজেল বলেছিলেন, ‘লিন্ডার মগজ ধোলাই করা হয়েছে। সে লুকিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যায়। সে আমাদের কাছে অনেক কিছুই লুকিয়ে রেখেছিল। এ ব্যাপারটি আমাদের অনেক কষ্ট দিয়েছে।’
লিন্ডার কক্ষ অনুসন্ধান করে একটি ট্যাবলেট কম্পিউটার পান ক্যাথরিন। তার ফেসবুকের দ্বিতীয় অ্যাকাউন্ট খুঁজে পান তিনি। এ অ্যাকাউন্ট দিয়ে লিন্ডা মধ্যপ্রাচ্যের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল। এসব দেখে লিন্ডার মা পুলিশকে খবর দেন।
জার্মানির পুলিশ জানিয়েছে, লিন্ডার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সহিংস কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার অভিযোগে তদন্ত চলছিল। কিন্তু তার অনুপস্থিতির কারণে তদন্ত বন্ধ রয়েছে।
লিন্ডাকে ইরাকে নিয়োজিত মার্কিন সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লিন্ডার সঙ্গ আরও চার জার্মান নারীসহ আইএসের ২০ নারীযোদ্ধাকে গত সপ্তাহে আইএসের তৈরি সুড়ঙ্গ থেকে আটক করে ইরাকি বাহিনী। তারা রাশিয়া, তুরস্ক, কানাডা ও চেচনিয়া থেকে আসা। ইরাকি বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, সুড়ঙ্গে অস্ত্র ও আত্মঘাতী বেল্ট পাওয়া গেছে।

No comments

Theme images by compassandcamera. Powered by Blogger.